(ভূমিরূপ প্রক্রিয়া,Geomorphic Process),Fold ,Class-11, 2nd Semester,Physical Geography,Unit-2

ভূমিরূপ প্রক্রিয়া (Geomorphic Process)Geography,11 2nd Semester                        

……………………………………………………………………………………………………………………………………………

ভূমিরূপ প্রক্রিয়া

              প্রাকৃতিক ভূগোলের বিষয়সমূহ 

                        ভূমিরূপ প্রক্রিয়া

                Geomorphic process

…………………. মগজাস্ত্র………………..

(১)ভূমিরূপ বিদ্যার জনক উইলিয়াম  মরিস ডেভিস। 

(২)১৮৯৩ খ্রিস্টাব্দে উইলিয়াম মরিস ডেভিস Geomorphology কথাটি ব্যবহার করেন। 

(৩)টেকটনিক কথাটির অর্থ গঠন বা নির্মাণ 

(৪)মৃত্তিকা বিজ্ঞানের জনক ডকুচেভ। 

(৫)গ্রেড(grade) শব্দটি সর্বপ্রথম ব্যবহার করেন জি.কে গিলবার্ট G.K Gilbert ১৮৭৬ খ্রিস্টাব্দে। 

(৬)গ্রেডেশন (gradation)শব্দটি সর্বপ্রথম প্রয়োগ করেন চেম্বারলিন ও স্যালিসবারি ১৯০৪

(৭)গ্রানাইট শিলা দ্বারা গঠিত ভূমিরূপ গোলাকৃতি ।

(৮)ব্যাসল্ট  শিলা দ্বারা  গঠিত ভূমিরূপ চ্যাপ্টার আকৃতি হয় ।

(৯)USDAএর পুরো নাম United States department of agriculture 

(১০)ABC of soil বইটি লিখেছেন Jacob Samuel   Joffe

(১১)A B স্তরকে একত্রে সোলাম বলে ।

(১২)উষ্ণ মরু অঞ্চলে প্রাপ্ত  অনুচ্চপাহাড়কে  ইনসেলবার্জ বলে  ।

(১৩)শিলা চূর্ণ দ্বারা থেকে মাটি সৃষ্টির প্রক্রিয়াকে পেডোজেনেসিস বলে ।

(১৪)আবহবিকার শব্দটি সর্বপ্রথম ব্যবহার করেন গিলবার্ট ।

(১৫) মৃত্তিকা সংক্রান্ত  বিজ্ঞানকে পেডোলজি বলে । 

(১৬) মৃত্তিকা বিজ্ঞানীদের পেডোলজিস্ট বলে ।

(১৭) যে শিলা থেকে মৃত্তিকার সৃষ্টি হয় তাকে আদি শিলা বা জনক শি্লা বলে ।

(১৮)শিলাস্তরে থাকা অতি সূক্ষ্ম  চিড়কে দারণ বলে । 

(১৯)শিলাস্তরের টানে ও চাপে দারণ যখন বরফাকে পরিণত হয় তখন তাকে  ফাটল বলে ।

(২০) ৫ই ডিসেম্বর কে বিশ্ব মাটি দিবস বলে ।

(২১)পৃথিবীর দীর্ঘতম চ্যুতির নাম  ক্যালিফোর্নিয়ার  সান আন্দ্রিজ চ্যুতি  ।.

(২২)ক্লাইনোমিটার (clinometer )যন্ত্রের সাহায্যে নতির মান নির্ণয় করা হয়                          

  🌴🌼       🌿   🌴🌼       🌿     🌴🌼       🌿  🌴🌼    🌴🌼       🌿  🌴🌼🌴🌼       🌿  🌴🌼            ……………………………………………………………………………………………………………………………………………

(১) ভূমিরূপ প্রক্রিয়া কাকে বলে?                             

উত্তর- ভূমিরূপ প্রক্রিয়া (Geomorphic process)– যে বিশেষ ভৌত ও রাসায়নিক পদ্ধতির দ্বারা ভূমিরূপের পরিবর্তন ও বিবর্তন ঘটে তাকে ভূমিরূপ প্রক্রিয়া বলে। ভূমিরূপ প্রক্রিয়া বা প্রাকৃতিক শক্তির দ্বারা ভূমিরূপের  পরিবর্তন হয়ে যে ভূমিরূপের সৃষ্টি হয় তাকে ভূমিরূপের ভাস্কর্য বলে । ভূমিরূপ প্রক্রিয়াকে দুই ভাগে ভাগ করা হয় (ক)পার্থিব প্রক্রিয়া  (খ)অপার্থিব বা মহাজাগতিক প্রক্রিয়া 

(২)পার্থিব প্রক্রিয়া কাকে বলে?

উত্তর- পৃথিবীতে যে সব ভূ- গঠনকারী প্রক্রিয়া অনবরত কাজ করে চলেছে তাদের পার্থিব প্রক্রিয়া বলে। পার্থিব প্রক্রিয়া দুই ধরনের যথাঃঅন্তর্জাত  প্রক্রিয়া ও বহির্জাত প্রক্রিয়া। 

(৩) অপার্থিব প্রক্রিয়া কাকে বলে?

উত্তর-পৃথিবী পৃষ্ঠের বাইরে অর্থাৎ মহাকাশ থেকে আগত কোন বস্তু যদি ভূমিরূপ গঠনে বিশেষ ভূমিকা গ্রহণ করে তবে তাকে অপার্থিব প্রক্রিয়া বা মহাজাগতিক প্রক্রিয়া বলে।  যেমন -উল্কাপাত। উল্কাপাতে ভূ-পৃষ্ঠে  গর্ত  সৃষ্টি হয়। 

(৪) অন্তর্জাত প্রক্রিয়া( Endogenic process)কাকে বলে?

উত্তর-ভূ-অভ্যন্তরে যে প্রক্রিয়া চলতে থাকে এবং ভূমিরূপের নানা পরিবর্তন হয় তাকে অন্তর্জাত প্রক্রিয়া বলে। 

অন্তর্জাত প্রক্রিয়ার বৈশিষ্ট্য:

ক)অন্তর্জাত প্রক্রিয়া  আকস্মিক অথবা ধীরভাবে কাজ করে ভূমিরূপের পরিবর্তন ঘটায়।                                                                                                                                                                                                       খ)অন্তর্জাত প্রক্রিয়ায় ভূত্বকের আপেক্ষিক স্থানান্তর ঘটে।মহাদেশ,মহাসাগর,পর্বত,মালভূমি,সমভূমি ইত্যাদি প্রাথমিক ভূমিরূপের সৃষ্টি হয়।                                                                                    

 গ) অন্তর্জাত প্রক্রিয়াকে কার্যকরী করার জন্য নানারকম বল বা শক্তি কাজ করে।

 ঘ) ভূ- বিপর্যয় অন্তর্জাত প্রক্রিয়ার ফল ।

উদাহরণ – ভূমিকম্প,  অগ্ন্যুৎপাত, ভূ আলোড়ন হলো অন্তর্জাত  প্রক্রিয়া বা শক্তি।              

(৫)অন্তর্জাত শক্তি বা প্রক্রিয়া  সম্পর্কে লিখ ।

উত্তর--অন্তর্জাত প্রক্রিয়াকে দুটি ভাগে ভাগ করা যায় 

যথা- (ক)ধীর আলোড়ন (Slow movement) (খ)আকস্মিক  আলোড়ন (Sudden Movement)

(ক)ধীর আলোড়ন-যে আলোড়ন ধীর গতিতে ভূমিরূপের পরিবর্তনে অংশগ্রহণ করে তাকে ধীর আলোড়ন  বলে। ধীর আলোড়ন তিন প্রকার-

 ভূ-গাঠনিক আলোড়ন বা টেকটনিক প্রক্রিয়া (Tectonic movement)-এই প্রক্রিয়ায় ভূ-ত্বকের আপেক্ষিক স্থানান্তরের মাধ্যমে পর্বত, মালভূম, সমভূমি , চ্যুতি,উপত্যকা ইত্যাদি প্রাথমিক ভূমিরূপের সৃষ্টি হয়। ভূগাঠনিক  আলোড়ন দুই প্রকার-                                      

(i) গিরিজনি  আলোড়ন ও  (ii)মহীভাবক আলোড়ন

(i)গিরিজনি  আলোড়ন (Orogenic movement)-যে আলোড়ন পৃথিবীর স্পর্শক বরাবর বা অনুভূমিকভাবে  ক্রিয়াশীল এবং ভঙ্গিল পর্বত গঠন করে তাকে গিরিজনি  আলোড়ন বলে ।

(ii)মহীভাবক আলোড়ন(Epeirogenic movement)-যে আলোড়ন পৃথিবীর  ব্যাসার্ধ বরাবর কার্যকরী এবং মহাদেশ মহাসাগর চ্যুতি গ্রস্ত উপত্যকা, স্তুপ পর্বত ইত্যাদি গঠন করে তাকে মহীভাবক আলোড়ন বলে 

a) সমস্থিতিক আলোড়ন (Isostatic movement)  যে আলোড়ন Asthenosphere-এর  উপর ভাসমান পর্বত, মালভূমি   ,সমভূমি, মহাসাগর ইত্যাদির ঘনত্ব ও  ভর  অনুসারে পরস্পরের মধ্যে উচ্চতার ভারসাম্য বজায় রাখে তাকে সমস্থিতিক আলোড়ন বলে

b) ইউস্ট্যাটিক আলোড়ন(Eustatic movement)-যে আলোড়নে সমুদ্রপৃষ্ঠের উত্থান বা অবনমন ঘটে তাকে  ইউস্ট্যাটিক আলোড়ন বলে ।

(খ)আকস্মিক  আলোড়ন –যে আলোড়ন  হঠাৎ  ক্রিয়াশীল হয়ে ভূমিরূপের   হঠাৎ পরিবর্তন ঘটায় তাকে আকস্মিক  আলোড়ন বলে । অগ্ন্যুৎপাত, ভূমিকম্প ইত্যাদি আকস্মিক  আলোড়নের উদাহরণ ।       

 (১)ভাঁজ কাকে বলে?

ভু-আলোড়নে উৎপন্ন অনুভূমিক সংনমন বলের প্রভাবে প্রবল পার্শ্বচাপজনিত কারণে কোমল শিলায় যে বক্রতা সৃষ্টি হয় তাকে ভাঁজ বলে। ভাঁজের আরেক নাম বলি। 

ভাঁজের বৈশিষ্ট্য- 

(i)পার্শ্বচাপের  ফলে উৎপন্ন সংকোচন বা সংনমন বলের প্রভাবে ভাঁজ সৃষ্টি হয় । (ii)ভাঁজ সাধারণত  সাধারণত কোমল শিলাস্তরে দেখা যায় ।.(iii) গিরিজনি  আলোড়ন ভাঁজ   সৃষ্টির মূল কারণ ।

(২)ভাঁজ  সৃষ্টির কারণ লিখ ।

উত্তর : ভাঁজের উৎপত্তির কারণ : শিলাস্তরে ভাঁজের প্রকৃতি, অন্তর্জাত শক্তির তীব্রতা ও অনুভূমিক চাপের প্রকৃতি ইত্যাদি ভাঁজের গঠনকে নিয়ন্ত্রণ করে। ভূত্বকে ভাঁজ বিভিন্ন কারণে সৃষ্ট হয়। ভাঁজের উৎপত্তির কারণগুলিকে দুটি ভাগে ভাগ করা যায়।যেমন— (1) অন্তর্জাত প্রক্রিয়ার প্রভাবজনিত ভূ-আলোড়ন এবং (i) বহির্জাত প্রক্রিয়ার প্রভাবে ভূত্বকে সৃষ্ট ভাঁজ।

(i) অন্তর্জাত প্রক্রিয়ার প্রভাবজনিত ভূ-আলোড়ন : অন্তর্জাত প্রক্রিয়ার প্রভাবে পাললিক শিলাস্তরে অনুভূমিক পার্শ্ব চাপ বৃদ্ধি পেলে ভাঁজের সৃষ্টি হয়। পাললিক শিলাস্তরে অনুভূমিক পার্শ্বচাপ বিভিন্ন ভাবে সৃষ্ট হয়। যেমন –

(1) তাপীয় সংকোচন : জেফ্রির তাপীয় সংকোচন মতবাদ অনুযায়ী পৃথিবী তাপ বিকিরণ করে তরল অবস্থা থেকে শীতল ও কঠিন হওয়ার সময় শিলাস্তর সংকুচিত হয়। এই সংকোচনের মাত্রা বৃদ্ধি পেলে ভাঁজের সৃষ্টি হয়।

(2) বিপরীতমুখী অনুভূমিক পার্শ্বচাপ : অন্তর্জাত প্রক্রিয়ার প্রভাবে শিলাস্তরের মধ্যে বিপরীতমুখী অনুভূমিক পার্শ্বচাপ বৃদ্ধি পেলে ভাঁজের সৃষ্টি হয়।

(3) ভূ-গাঠনিক পাত সঞ্চালন : পাতসংস্থান তত্ত্ব অনুযায়ী ভূত্বক কতকগুলি চলমান ছোটো ও বড়ো পাত দিয়ে সৃষ্টি হয়েছে। পাতগুলি চলমান হওয়ায় গুরু শিলায় গঠিত পাত লঘু শিলায় গঠিত পাতের নীচে অনুপ্রবেশ করলে, পাতসীমান্ত বরাবর মহীখাত অঞ্চলে সঞ্চিত পলিসমূহে  ভাঁজের সৃষ্টি হয়।

(4) পরিচলন স্রোত : Asthenosphere এ তেজস্ক্রিয় পদার্থের তাপ বিকিরণের ফলে সৃষ্ট পরিচলন স্রোতের প্রভাবে ভূ-আলোড়ন সংঘটিত হয়। ভূ-আলোড়নের ফলে শিল্পাস্তরে পার্শ্বচাপ বৃদ্ধি পেলে ভাঁজের সৃষ্টি হয়।

(5) আগ্নেয় উদ্‌বেধ : প্রবল ভূ-আলোড়নজনিত কারণে আগ্নেয় পদার্থ ভূপৃষ্ঠে না এসে পাললিক শিলাস্তরের মধ্যে জমাট বেঁধে আগ্নেয় উদ্‌বেধ গঠন করে। এর ফলে পাললিক শিলাস্তরে ভাঁজের সৃষ্টি হয়। যেমন:ল্যাকোলিথে এই ধরনের ভাঁজ সৃষ্টি হতে দেখা যায়।

(6) ম্যাগমার ঊর্ধ্বমুখী চাপ : ভূ-অভ্যন্তরস্থ ম্যাগমার ঊর্ধ্বমুখী চাপের ফলে ভূপৃষ্ঠের ওপরে অবস্থিত পাললিক শিলাস্তরে ভাঁজের সৃষ্টি হয়।

(7) ভূ-অভ্যন্তরীণ লবণ কেলাসের ঊর্ধ্বমুখী চাপ : ভূ-অভ্যন্তরে সঞ্চিত লবণ কেলাসে পরিণত হলে ঊর্ধ্বমুখী চাপ সৃষ্টি করে। এর ফলে শিলায় ভাঁজের সৃষ্টি হয়।

(৩) ভাঁজের জ্যামিতিক রূপ বা ভাঁজের গঠন বা ভাঁজের গাঠনিক উপাদান  উল্লেখ  কর ।

ভাঁজের জ্যামিতিক রূপ বা ভাঁজের গাঠনিক উপাদান (Geometric Parts of Fold or Structural Elements ofFold)

১) অ্যান্টিফর্ম বা উর্ধ্বভঙ্গ (Antiform): জ্যামিতিক রূপ অনুযায়ী যে ভাঁজের বাঁক ওপরের দিকে থাকে তাকে অ্যান্টিফর্ম বা উর্ধ্বভঙ্গ বলে।

২) সিনফর্ম বা অধোভঙ্গ(Synform) : যে ভাঁজের বাঁক নীচের দিকে থাকে তাকে সিনফর্ম বা অধোভঙ্গ বলে।

৩) অক্ষ (Fold axis): অ্যান্টিফর্ম ও সিনফর্মের মাঝ বরাবর যে রেখা টানা যায়, তাকে বলা হয় অক্ষ। সুতরাং ভাঁজযুক্ত শিলাস্তরের স্তরায়ন তলের সঙ্গে ভাঁজের অক্ষতল যে রেখা বরাবর মিলিত হয়, তাকে ভাঁজের অক্ষ বলে। 

 বৈশিষ্ট্য: ভাঁজের  অক্ষ হেলানো/উল্লম্ব / অনুভূমিক হতে পারে।

(৪) অক্ষতল (Axial plane): অক্ষ বরাবর যে তল (plane) ভাঁজকে সমান দু-ভাগে ভাগ করে তাকে বলে অক্ষতল।  বৈশিষ্ট্য: (i) অক্ষতল ভাঁজপ্রাপ্ত শিলাস্তরকে দু-ভাগে ভাগ করে। (ii) অক্ষতল বাঁকা অথবা সরল হতে পারে।

(৫) বাহু (Limb)- ভাঁজ অক্ষ থেকে  দুদিকে বিস্তৃত দুটি অংশ বা পার্শ্বকে বাহু বলে  । • বৈশিষ্ট্য : ভাঁজের বাহু দুটি সমান অথবা অসমান দৈর্ঘ্যের হতে পারে।  বাহুগুলি একই বা বিপরীত দিকে সমান বা অসমান কোণে হেলে থাকতে পারে।

(৬)গ্রন্থিবিন্দু (পাদবিন্দু) (Hinge): ভাঁজের যে বিন্দুতে শিলাস্তরের বক্রতা সবচেয়ে বেশি সেই বিন্দুকে গ্রন্থিবিন্দু বা হিঞ্জ। শিলাস্তরে যে অঞ্চলে বক্রতা সবচেয়ে বেশি হয় তাকে গ্রন্থিবলয় বলা হয়।

(৭) গ্রন্থিরেখা (Hing Line): অ্যান্টিফর্ম ও সিনফর্ম-এ যে রেখা বরাবর শিলার নতির দিক পালটে যায়, তাকে বলে ভাঁজের গ্রন্থিরেখা।

(৮) বাহুর নতি (Dip of the Limb) : অনুভূমিক তলের সঙ্গে  ভাঁজের বাহু যে কোণে হেলে থাকে, তাকে বাহুর নতি বলে। নতির মান শূন্য (0°) থেকে সর্বাধিক 90° পর্যন্ত হয়।

(৯) বক্রতা পরিবর্তন বিন্দু (Inflection Point) : দুটি পাশাপাশি গ্রন্থিরেখার মধ্যে কোনো বাহুর যে বিন্দুতে

উত্তল ও অবতল অংশে সীমা নির্দিষ্ট হয়, তাকে বক্রতা পরিবর্তন বিন্দু বলে।

(১০) শীর্ষ বিন্দু ও পাদ বিন্দু : কোনো ভাঁজে প্রস্থচ্ছেদের সর্বোচ্চ বিন্দুকে শীর্ষ বিন্দু ও সর্বনিম্ন বিন্দুকে পাদ বিন্দু বলে।

(১১)আয়াম (Strike) -একটি কাল্পনিক অনুভূমিক  তলের সাপেক্ষে  ভাঁজপ্রাপ্ত শিলা যে রেখা বরাবর ছেদ করে তাকে আয়াম বলে।

(৪)ভাঁজের শ্রেণীবিভাগ কর

অবতল ও উত্তরলতা অনুসারেবাহুর সাদৃশ্য বা  অক্ষতল অনুসারেকৌণিক মান  অনুসারেভাঁজের ভঙ্গি অনুসারেতীক্ষ্ণতাও গঠন অনুসারেস্থূলতা অনুসারে
ঊর্ধভঙ্গপ্রতিসমসংকীর্ণঅবনতএকনতসমরূপী
অধভঙ্গঅপ্রতিসমমুক্ত  দ্বি অবনতপাখা ভাজক্ষীণ শীর্ষ
সমপ্রবণবদ্ধবহু নততীক্ষ্ণভোজসমান্তরাল
  শায়িতমৃদুবাক্স ভাজ।
বিপর্যস্ত

(৫)যে কোনো চার প্রকার  ভাঁজের বর্ণনা বর্ণনা দাও।

(ক) প্রতিসম ভাঁজ : যে ভাঁজের দুপাশে সমান পার্শ্বচাপের ফলে দুটি বাহু সমান কোণে দুদিকে নত হয়ে থাকে এবং দুটি বাহু সমান দীর্ঘ হয়, তাকে প্রতিসম ভাঁজ বলে ।

বৈশিষ্ট্য

:(i)প্রকৃতি : প্রতিসম ভাঁজে বাহুদুটির ঢাল বা নতি সমান কোণে অবস্থান করে,

(ii) গঠন : সমান ও বিপরীতমুখী সংকোচনকারী বলের প্রভাবে প্রতিসম ভাঁজের সৃষ্টি হয়,

(iii) অক্ষতলের অবস্থান : এই ধরনের ভাঁজের অক্ষতল উল্লম্বভাবে অবস্থান করে,

(iv) বাহুর দৈর্ঘ্য : এই ভাঁজে বাহুদুটির দৈর্ঘ্য সমান হয়,

(v) সৃষ্টি ভূমিরূপ : এরূপ ভাঁজের ওপরে প্রতিসম শৈলশিরার সৃষ্টি হয়।

  (খ)অপ্রতিসম ভাঁজ – যে ভাঁজের দুপাশে অসমান পার্শ্বচাপের ফলে একটি বাহু অন্য বাহুটির চেয়ে দৈর্ঘ্যে বড়ো হয় এবং দু পাশে দুটিবিপরীত দিকে প্রসারিত বাহু অসমান কোণে হেলানো থাকে, তাকে অপ্রতিসম ভাঁজ বা অসম ভাঁজ বলে

 বৈশিষ্ট্য :

(i)প্রকৃতি- অপ্রতিসম ভাঁজে বাহুদুটির ঢাল অসমান কোণে দু’পাশেকাত হয়ে অবস্থান করে।

(ii) গঠন – সমান ও বিপরীতমুখী সংকোচনকারী বলের প্রভাবে অপ্রতিসম ভাঁজের সৃষ্টি হয়।

(iii) অক্ষতলের অবস্থান- এই ধরনের ভাঁজের অক্ষতল হেলে অবস্থান করে।

(iv) বাহুর দৈর্ঘ্য : এই ধরনের ভাঁজে বাহুদুটির দৈর্ঘ্য অসমান প্রকৃতির।

(v) সৃষ্ট ভূমিরূপ – এরূপ ভাঁজের ওপরে ভৃগু আকৃতির অপ্রতিসম উচ্চভূমির সৃষ্টি হয়।

(গ)ঊর্ধ্বভাঁজ বা ঊর্ধ্বভঙ্গ –যে ভাঁজে শিলাস্তর পরের দিকে বাঁক নিয়ে উত্তল ভাঁজ গঠন করে, তাকে উর্ধ্বভাঁজ বা ঊর্ধ্বভঙ্গ বলে ।

বৈশিষ্ট্য :

(i)ভাঁজের অক্ষ থেকে বাহু ও নতির অভিমুখ বিপরীতমুখী।

ii) ঊর্ধ্বভঙ্গে নবীন শিলাস্তর ভাঁজের কিনারার এবং প্রাচীন  শিলাস্তর ভাঁজের ভিতরের দিকে অবস্থান করে।

(iii ঊর্ধ্বভঙ্গের ওপরে গড়ে ওঠে, ঊর্ধ্বভঙ্গ শৈলশিরা ।

(ঘ) অধোভাজ বা অধোভঙ্গ : যে ভাঁজে শিলাস্তর নীচের দিকে বাঁক নিয়ে অবতল ভাঁজের সৃষ্টি করে, তাকে অধোভাজ বা অধোভঙ্গ বা সিনফর্ম বলে   ।

বৈশিষ্ট্য :                                                                                                     

(i) ভাঁজের বাহু দুটি একে অপরের দিকে নত হয়ে থাকে। 

(ii) ভাঁজের কেন্দ্রের কাছাকাছি নবীন শিলাস্তর অবস্থান করে।

(iii) অপ্রতিসম ভাঙের ক্ষেত্রে দুটি বাহুর দৈর্ঘ্য সমান হয় না।

(iv) অধোভঙ্গের ওপরে যে ভূমিরূপ গড়ে ওঠে, তাকে অধোভঙ্গ উপত্যকা বলা হয়।

(v) অধোভঙ্গ উপত্যকার ভিতর দিয়ে অনুদৈর্ঘ্য অনুগামী নদী প্রবাহিত হয়।

(৫) ভাঁজের  ফলে সৃষ্ট ভূমিরূপের  বর্ণনা দাও ।

ভাঁজের ফলে গঠিত সর্বাপেক্ষা উল্লেখযোগ্য ভূমিরূপগুলি হল—

(১) ভঙ্গিল  পর্বতের গঠন: মহাদেশীয় ও মহাসাগরীয় পাত একে অপরের দিকে অগ্রসর হলে বেশি ঘনত্বের শিলা দ্বারা গঠিত মহাসাগরীয় পাতের চাপে হালকা মহাদেশীয় পাতের প্রান্তভাগে   নিম্নখাতের সৃষ্টি হয়। একে মহীখাত বলা হয়।এই নিম্নখাতে পলি সঞ্চিত হতে থাকে। পরবর্তী সময়ে যখন এই দুটি পাত পরস্পর আরও এগিয়ে আসে তখন বেশি ঘনত্বের মহাসাগরীয় পাত কম ঘনত্বের মহাদেশীয় পাতের তলায় প্রবেশ করে। ফলে চাপ আরও বেড়ে যায় ও মহীখাতে জমা হওয়া পলি ভাঁজপ্রাপ্ত হয়ে ওপরে উঠে ভঙ্গিল পর্বতের সৃষ্টি করে। রকি, আল্লস, হিমালয়-এর অন্যতম উদাহরণ।

(২)(স্বাভাবিক বা জুরা ভূগঠন (Jura Structure): সাধারণ ভাঁজযুক্ত অঞ্চলে ঊর্ধ্বভঙ্গে শৈলশিরা এবং অধোভঙ্গে উপত্যকা গঠিত হয়। ইউরোপে জুরা 

পর্বতের অনুরূপ গঠন লক্ষিত হয় বলে এরূপ ভূমিগঠনকে জুরা গঠন (Jura Structure) বলে। নবীন ভাঁজযুক্ত পার্বত্য অঞ্চলে এরূপ ভূমিরূপ স্বাভাবিক।

(৩ বৈপরীত্য ভূমিরূপ (Inversion of Topography): প্রাচীন ভাঁজযুক্ত অঞ্চলে দীর্ঘকাল-ব্যাপী ক্ষয়ের ফলে উর্ধ্বভঙ্গে উপত্যকা (Anticlinal Valley) বা সিনফর্ম (Synform) এবংঊর্ধ্বভঙ্গের ক্ষয়প্রাপ্ত দ্রব্য সঞ্চয়ে অধোভঙ্গে  শৈলশিরা (Synclinal Ridge) বা অ্যান্টিফর্ম (Antiform) গঠিত হয়। এরূপ বিপরীত ভূমিরূপ গঠন হয় বলে একে বৈপরীত্য ভূমিরূপ বলে।

 (৪)একনত ভৃগুতট (Monoclinal Scarp): একনত ভাঁজের নতি ঢালটি খুব খাড়াই হলে এরূপ ভৃগুতট গঠিত হয়। ভারতের অসম মালভূমির দক্ষিণ ঢালটি এরূপ।

(৫) অ্যাপালেশিয়ান ধাঁচের শৈলশিরা (Appalachian Type Ridge ): ঘনসন্নিবিষ্ট উর্ধ্বভঙ্গ ও অধোভঙ্গ সমান্তরাল শৈলশিরাগুলির সঙ্গে পর্যায়ক্রমে অবস্থান করলে তাকে অ্যাপালেশিয়ান ভূমিরূপ ও শৈলশিরা বলে।

(৬)ভৃগুতট ও উপত্যকা (Scarp & Valley Topography): কঠিন ও নরম শিলা পর্যায়ক্রমে থাকলে নরম শিলা কঠিন শিলার গাত্র বরাবর ক্ষয়প্রাপ্ত হলে ভৃগুতট ও উপত্যকা পর্যায়ক্রমে গঠিত হয়। প্যারিস অববাহিকায় এরূপ ভূমিরূপ দেখা যায়।

 গম্বুজাকৃতি ভূমিরূপ (Domal Topography): ভাঁজের দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ সমান হলে শীর্ষদেশটি প্রায় চ্যাপটা বা খিলানের শীর্ষদেশের মতো অর্থাৎ গম্বুজাকৃতি ধারণ করে।

[৮]এবড়ো খেবড়ো ভূমিরূপ সৃষ্টি-  ভাঁজের  ফলে বিশাল এলাকা জুড়ে  বন্ধুরতার সৃষ্টি হয় । 

 

Leave a Comment