🌴🌼 🌿 🌴🌼 🌿 সমস্থিতি –
Geography Class -11 ,2nd Semester 🌴🌼 🌿 🌴🌼
সমস্থিতির ধারণা
প্রাকৃতিক ভূগোলের মৌলিকবিষয়সমূহ
সমস্থিতির ধারণা
Concept of Isostasy
মগজাস্ত্র
১) Isostasy শব্দটি জার্মান শব্দ Isostasios থেকে উৎপত্তি লাভ করেছে। এর অর্থ
ভারসাম্য (equipoise)
২) গ্রিক শব্দ Iso ( সমতা) এবং statios (অবস্থা) থেকে Isostasy শব্দটির উৎপত্তি হয়েছে।
৩)১৮৮৯ খ্রিস্টাব্দে ভূতত্ত্ববিদ ডাটন (Dutton) সর্বপ্রথম Isostasy)সম্পর্কে নিজস্ব ধারণা ব্যক্ত করেন।
৪)ভূ-খণ্ডগুলির(পর্বত মালভূমি সমভূমি) উচ্চতার সঙ্গে ঘনত্বের সম্পর্ক ব্যস্তানুপাতিক। যে ভূখন্ড যত উঁচু তার শিলার ঘনত্ব কম। পর্বতের শিলার ঘনত্ব সবচেয়ে কম।
৫)যে স্থান যত উঁচু ও ভর বেশি তার শিঁকড় তত গভীরে। পর্বতের উচ্চতা ও ভর সবচেয়ে বেশি। তাই পর্বত সবচেয়ে বেশি নিচে ঢুকে আছে।
৬) পাহাড় পর্বত মালভূমি সমভূমি ইত্যাদি ভূ-খণ্ডগুলি আস্থেনোস্ফিয়ারের উপর ভাসমান অবস্থায় বিরাজমান। এই ভাসমানতা আর্কিমিডিসের প্লবতা সূত্রের উপর প্রতিষ্ঠিত।
৭)অভিকর্ষজ বলের (g) প্রমাণ একক হল গ্যাল( gal)বিখ্যাত জ্যোতির্বিদ গ্যালিলিও নামানুসারে এই এককের জন্ম হয়েছে। এক গ্যাল = ১ সেমি/বর্গ সেকেন্ড । গ্যাভিমিটার যন্ত্রের সাহায্যে (g) মাপা হয় ।
৮) কোনো বস্তু পৃথিবীর কেন্দ্র থেকে যত দূরে অবস্থান করে তার অভিকর্ষজ বলের মান তত কম হয়।
৯)যে বল দ্বারা মহাবিশ্বের যে কোনো দুটি বস্তু পরস্পরকে আকর্ষণ করে তাকে মহাকর্ষ বলে।যে বল দ্বারা ভূপৃষ্ঠের উপর বা কাছাকাছি অবস্থিত কোন বস্তুকে পৃথিবী তার কেন্দ্রের দিকে আকর্ষণ করে তাকে অভিকর্ষজ বল বলে।
১০)স্থির তরল বা গ্যাসীয় পদার্থের মধ্যে কোন বস্তুকে আংশিক বা সম্পূর্ণ ডুবিয়ে দিলে ওই বস্তুটির উপর যে ঊর্ধ্বমুখী উলম্ব বল উৎপন্ন হয় তাকে প্লবতা বলে।
১১)বস্তুর ওজন প্লবতার থেকে বেশি হলে বস্তুটি ডুবে যায়, বস্তুর ওজন প্লবতা থেকে কম হলে বস্তুটি ভাসতে থাকে, বস্তুর ওজন প্রগত অভয় সমান হলে বস্তুটি ডুবে ভেসে থাকে।
১২)সমস্থিতি সংক্রান্ত এইরির মতবাদটি ভাসমান তত্ত্বের উপর প্রতিষ্ঠিত।
১৩)সমস্থিতি সংক্রান্ত প্র্যাটের মতবাদটি প্রতিবিধান তলের নীতির উপর প্রতিষ্ঠিত।
১৪)সিমাটোজেনি শব্দটির জনক লেস্টার সি কিং (Lester C. King)
১৫) প্লাম্ব লাইন হল এক প্রান্তে ভার ঝুলানো দড়ির এমন একটি উলম্ব রেখা, যার সাহায্যে কোনো বস্তু তার উলম্ব অবস্থান থেকে কতখানি হেলে আছে তা নির্ণয় করা সম্ভব হয়।
১৬) আর্কিমিডিস ছিলেন একজন বিখ্যাত গ্রিক গণিতজ্ঞ। তিনি প্লবতার সূত্র আবিষ্কার করেন।
১৭) কোনো বস্তুর একক আয়তনের ভরকে তার ঘনত্ব বলে ।
১৮) জিওডেসি হলো নেভিগেশন ও ভূতাত্ত্বিক জরিপ বিজ্ঞানের অংশ।
🌴🌼 🌿 🌴🌼 🌿 🌴🌼 🌿 🌴🌼 🌴🌼 🌿 🌴🌼🌴🌼 ……………………………………………………………………………………………………………………………
সিলেবাস- সমস্থিতির ধারণা(Concept of isostasy)
(১)সমস্থিতির ব্যুৎপত্তিগত অর্থ(Etymological Meaning) লিখ।
উত্তর-গ্রিক শব্দ ‘Isos’ (Equal বা সমান) এবং ‘Statia’ (Stateবা স্থিতি অবস্থা) থেকে Isostasy (সমস্থিতি) শব্দটির উৎপত্তি হয়েছে। সুতরাং ‘Isostasy’ কথার অর্থ হল সমভাবে স্থিত হয়ে থাকা। তাই একে বাংলায় সমস্থিতি বলা হয়। 1889 সালে মার্কিন ভূতত্ত্ববিদ ডাটন (Clarence Dutton) সর্বপ্রথম ‘Isostasy’ শব্দটি ব্যবহার করেন।
(২)সমস্থিতি (Isostasy) কাকে বলে? প্রশ্নের মান – 2
উত্তর- • উল্ডরিজ ও মরগ্যান (Wooldridge and Morgan) : “ সমস্থিতি হল এমন অবস্থা যা বৃহৎ ভূ-পৃষ্ঠের উপর ভাসমান অবস্থায় থাকা পর্বত, মালভূমি, সমভূমি ,নিম্নভূমি ইত্যাদির ভারসাম্যকে উপস্থাপন করে”।
ডাটন (Dutton) : “পৃথিবীর ভাসমান অংশ (পর্বত, মালভূমি, সমভূমি এবং সমুদ্রের তলদেশ) ভূ-অভ্যন্তরীণ উপাদান অপেক্ষা হালকা শিলা পদার্থ (Rock material) দ্বারা গঠিত হয়ে ভারসাম্য রক্ষা করছে এবং ভূত্বকের ভূমিরূপসমূহ একটি যান্ত্রিক সামঞ্জস্য রক্ষা করছে—একে সমস্থিতি বলে ” ।
সর্বজনগ্রাহ্য সংজ্ঞা : ভূত্বকের বিভিন্ন উচ্চভূমির(পর্বত, পাহাড়, মালভূমি, সমভূমি,) সাথে নিম্নভূমি (হ্রদ, সমুদ্র মহাসাগর ইত্যাদি)পরস্পরের মধ্যে উচ্চতার তারতম্য বজায় রেখে যে সাম্যাবস্থা সৃষ্টি করে সেই ঘটনাকে সমস্থিতি বলে।
(৩)সমস্থিতি বৈশিষ্ট্য তিনটি লেখ । প্রশ্নের মান – 3
উত্তর--সমস্থিতির বৈশিষ্ট্য
১)Asthenosphere এর উপর ভাসমান বিভিন্ন ভূ-খণ্ড (পর্বত, মালভূমি,সমভূমি,নিম্নভূমি নিজেদের মধ্যে সাম্যবস্থা বজায় রেখে অবস্থান করে আছে।
২)যে ভূখণ্ড যত উঁচু এবং ভর বেশি সেই ভূখণ্ড তত গভীরে অবস্থান করে আছে।
৩)আর্কিমিডিসের প্লবতার সূত্র –সমস্থিতির ক্ষেত্রে আর্কিমিডিসের প্লবতার সূত্র প্রযোজ্য। বস্তুর ওজন প্লবতার থেকে বেশি হলে বস্তুটি ডুবে যায়, বস্তুর ওজন প্লবতা থেকে কম হলে বস্তুটি ভাসতে থাকে, বস্তুর ওজন ও প্লবতা উভয়ই সমান হলে বস্তুটি ডুবে ভেসে থাকে।
৪) Isostasyকথাটির আদি ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন কে করেন ?Isostasy কথাটির সর্বপ্রথম সার্থক প্রয়োগ কে করেন ?
উত্তর- ফরাসি ভূতত্ত্ববিদ পিয়ের বোগার (Pierre Bouguer) 1735 খ্রিস্টাব্দে সর্বপ্রথম Isostasy সম্পর্কিত বীজ বপন করেন। 1859 খ্রিস্টাব্দে ডাটন (Dutton) সর্বপ্রথম Isostasy কথাটির সার্থক প্রয়োগ করেন।
৫) প্রতিবিধান তল (Level of compensation) কাকে বলে? প্রতিবিধান তলের ধারণা কে দেন ?
উত্তর- ভূ-অভ্যন্তরের যে গভীরতায় চাপ ও পীড়নের পরিমাণ সমান তাকে প্রতিবিধান তল বলে।প্রতিবিধান তলের ধারণা দেন জে এইচ প্র্যাট(J.H Pratt)
৬)সমস্থিতি প্রমাণের জন্য যে বিজ্ঞানীগণ উল্লেখযোগ্য কাজ করেছেন তাঁদের নাম কী কী?
উত্তর- জি বি এইরি, জে এইচ প্র্যাট, ড্যালি প্রমুখ বিজ্ঞানী সমস্থিতি সম্পর্কিত নানা পরীক্ষানিরীক্ষা করেন।
🌴🌼 🌿 🌴🌼 🌿 🌴🌼 🌿 🌴🌼 🌴🌼 🌿 🌴🌼🌴🌼 🌿 🌴🌼 ……………………………………………………………………………………………………………………………………………
সিলেবাস-সমস্থিতিজনিত বিচ্যুতি (Isostatic anomaly)
(৩) তত্ত্বীয় অভিকর্ষ (Theoretical gravity) কাকে বলে ? প্রশ্নের মান – 2
উত্তর- অভিগত গোলকাকৃতি পৃথিবীর নিরক্ষীয় প্রদেশ স্ফীত এবং মেরু প্রদেশ চাপা। নিরক্ষীয় অঞ্চল থেকে তাই মেরু প্রদেশের দিকে অভিকর্ষজ বল বাড়তে থাকে। অক্ষাংশের সাপেক্ষে প্রাপ্ত অভিকর্ষজ মানকে ‘তাত্ত্বিক অভিকর্ষ”প্রমাণ অভিকর্ষ’ বলা হয়। তাত্ত্বিক অভিকর্ষ অক্ষাংশের মান বৃদ্ধির সাথে বাড়তে থাকে। অর্থাৎ তাত্ত্বিক অভিকর্ষ নিরক্ষরেখায় সবচেয়ে কম এবং মেরুর দিকে ক্রমশ তা বাড়তে বাড়তে মেরুতে সর্বাধিক হয়।
(৪) প্রকৃত অভিকর্ষ (Actual Gravity)-কাকে বলে ? প্রশ্নের মান – 2
উত্তর-পৃথিবী পৃষ্ঠে কোনো স্থানে যে অভিকর্ষজ মান নির্ধারিত হয়, তাকে প্রকৃত বা বাস্তব অভিকর্ষ বলা হয়। পৃথিবী বন্ধুর হওয়ায় একই অক্ষরেখা বরাবর পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানের প্রকৃত অভিকর্ষের মান ভিন্ন হয়।প্রকৃত অভিকর্ষের মান ভূমির উচ্চতা ও শিলা ঘনত্বের উপর নির্ভরশীল।
৫)অভিকর্ষ বিচ্যুতি (Gravity anomaly) কাকে বলে? প্রশ্নের মান -2
উত্তর-কোনো একটি নির্দিষ্ট অক্ষাংশগত স্থানে যে অভিকর্ষ টান থাকা উচিত তাকে প্রমাণ বা তাত্ত্বিক অভিকর্ষ (theoretical value) বলে। এটি নিরক্ষরেখায় সবচেয়ে কম এবং ক্রমশ বৃদ্ধি পেয়ে মেরুতে সর্বোচ্চ হয়। উপগোলক (Geoid) আকৃতি বিশিষ্ট পৃথিবীর বন্ধুর ভূপৃষ্ঠে বিভিন্ন স্থানে পরিমাপ করে পাওয়া অভিকর্ষ মানকে প্রকৃত অভিকর্ষ (actual gravity) বলে। তাত্ত্বিক মান ও প্রকৃত মানের পার্থক্যকে অভিকর্ষ বিচ্যুতি (Gravity anomaly) বলে। অতএব, অভিকর্ষের তাত্ত্বিক মান – প্রকৃত মান = অভিকর্ষ বিচ্যুতি। প্রকৃত মান তাত্ত্বিক মানের চেয়ে বেশি হলে ধণাত্মক বিচ্যুতি এবং প্রকৃত মান তাত্ত্বিক মানের চেয়ে কম হলে ঋণাত্মক বিচ্যুতি হয়।
৬) অভিকর্ষজ ত্বরণ (Gravitational Acceleration)কাকে বলে প্রশ্নের – মান2
উত্তর-অভিকর্ষ বলের প্রভাবে ওপর থেকে বাধাহীনভাবে কোনো বস্তু নীচের দিকে নামার সময় বেগ ক্রমশ বাড়তে থাকে। অর্থাৎ একটি ত্বরণের সৃষ্টি হয়। পতনশীল বস্তুর বেগ প্রতি সেকেন্ডে মোটামুটি 9.81 মিটার বা 981 সেমি করে বেড়ে যায়। এই বেগ বাড়ার হারকে ত্বরণ বলা হয়। অভিকর্ষ বলের কারণে এই ত্বরণ নিয়ন্ত্রিত হয় বলে একে ‘অভিকর্ষজ ত্বরণ’ বলা হয়। অভিকর্ষজ ত্বরণ ‘g’ অক্ষর দ্বারা প্রকাশ করা হয়। অভিকর্ষজ ত্বরণ বা g অক্ষাংশ বৃদ্ধিতে বেড়ে যায়। ভূপৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়লে অভিকর্ষজ ত্বরণ কমে, বিপরীত দিকে ভূপৃষ্ঠের উচ্চতা কমলে অভিকর্ষজ ত্বরণ বাড়তে থাকে।
৭)অভিকর্ষজ বিচ্যুতি (Gravity anomaly) কয় প্রকার ও কি কি ? প্রশ্নের মান – 2
উত্তর-অভিকর্ষজ বিচ্যুতি দুই প্রকারের হয়- যথা ধন্যাত্মক অভিকর্ষ বিচ্যুতি এবং ঋণাত্মক অভিকর্ষজ বিচ্যুতি
(৮)ধনাত্মক অভিকর্ষ বিচ্যুতি (Positive Gravity anomaly)কাকে বলে ? প্রশ্নের মান – 2
কোনো স্থানে অক্ষাংশ অনুসারে যে তাত্ত্বিক অভিকর্ষজ মান প্রাপ্ত হয় তার তুলনায় ওই স্থানের সমীক্ষা করে পাওয়া প্রকৃত অভিকর্ষজ মান যদি বেশি হয়, তবে যে অভিকর্ষ বিচ্যুতি দেখা যায় তাকে’ধনাত্মক অভিকর্ষ বিচ্যুতি’ বলা হয়।সমভূমি বা সামুদ্রিক ভূত্বকের বিচ্যুতি ধনাত্মক হয়।
(৯)ঋণাত্মক অভিকর্ষ বিচ্যুতি (Negative Gravity anomaly)কাকে বলে ? প্রশ্নের মান – 2
উত্তর-কোনো স্থানের অক্ষাংশ অনুসারে যে তাত্ত্বিক অভিকর্ষজ মান প্রাপ্ত হয়, তার তুলনায় ওই স্থানের সমীক্ষা করে পাওয়া প্রকৃত অভিকর্ষজ মান যদি কম হয় তবে এই অভিকর্ষ বিচ্যুতিকে ‘ঋণাত্মক অভিকর্ষ বিচ্যুতি’ বলা হয়। নবীন ভঙ্গিল পর্বত শ্রেণিতে বিচ্যুতি ঋণাত্মক হয়। * সমীক্ষা করে পাওয়া কোনো স্থানের প্রকৃত অভিকর্ষজ মান নির্ভরশীল দুটি বিষয়ের ওপর— (i) পৃথিবীর কেন্দ্র থেকে স্থানটির দূরত্ব এবং(ii) স্থানটির শিলার ঘনত্বের ওপর।
🌴🌼 🌿 🌴🌼 🌿 🌴🌼 🌿 🌴🌼 🌴🌼 🌿 🌴🌼🌴🌼 ……………………………………………………………………………………………………………….
(১০)সমস্থিতিজনিত বিচ্যুতি কাকে বলে ? সমস্থিতিজনিত বিচ্যুতির কারণ লিখ । সমস্থিতিজনিত বিচ্যুতি কয় প্রকার ও কি কি ? প্রশ্নের মান –1+2+2=5
উত্তর-সমস্থৈতিক বিচ্যুতি(Isostatic Anomaly) : তাত্ত্বিক অভিকর্ষজ বিচ্যুতি ও প্রকৃত অভিকর্ষজ বিচ্যুতির পার্থক্যকে সমস্থৈতিক বিচ্যুতি বলে। অর্থাৎ, সমস্থৈতিক বিচ্যুতি = প্রকৃত অভিকর্ষজ বিচ্যুতি – তাত্ত্বিক অভিকর্ষজ বিচ্যুতি।
নবীন ভঙ্গিল পার্বত্যাঞ্চলে সমস্থৈতিক বিচ্যুতির মান ঋণাত্মক হয়। শিল্ড মালভূমি, সমুদ্রের তলদেশ প্রভৃতি অঞ্চলে সমস্থৈতিক বিচ্যুতির মান ধনাত্মক হয়।
সমস্থিতিজনিত বিচ্যুতির কারণ : প্রধানত দুটি কারণে অভিকর্ষ বিচ্যুতি হয়।
(1) ভূপৃষ্ঠস্থ শিলার সমস্থিতির ভারসাম্য না থাকলে তা কিছুটা উঠে কিংবা নেমে একটি নতুন ভারসাম্যে পৌঁছাতে চায়।
(ii) কোনো ভূখণ্ডের শিলা যদি স্বাভাবিকের থেকে ভারী বা হালকা হয়, সেক্ষেত্রে অভিকর্ষ বিচ্যুতি দেখা যায়।
পার্বত্য অঞ্চল ও উঁচু মালভূমির ক্ষেত্রে কম ঘনত্বযুক্ত শিলাস্তর বেশি থাকে বলে সেক্ষেত্রে অভিকর্ষজ বিচ্যুতি ঋণাত্মক হয়। পেরিডোটাইট শিলার ঘনত্ব বেশি বলে তা থেকে ধনাত্মক বিচ্যুতি পাওয়া যায়। সমুদ্রের তলদেশের শিলার ঘনত্ব বেশি হওয়ায় তা ধনাত্মক বিচ্যুতিযুক্ত হয়।
-অভিকর্ষ বিচ্যুতি শ্রেণিবিভাগ : অভিকর্ষ বিচ্যুতি তিন প্রকার। যথা-
(i) A বিচ্যুতি : অভিকর্ষ বিচ্যুতির মানকে যদি উচ্চতার প্রভাব বাদ দিয়ে সংশোধন করে নেওয়া হয়, তাহলে তাকে ‘A’ বিচ্যুতি বা Air Gravity Anomaly বলে।
(ii) B বিচ্যুতি -সমুদ্রতলদেশ থেকে উচ্চতা এক যন্ত্রের উচ্চতাজনিত অভিকর্ষ বিচ্যুতি, সামগ্রিক অভিকর্ষ বিচ্যুতির থেকে বাদ দিলে যে মানটি পাওয়া যায়, তাকে বিজ্ঞানী বোগার-এর নামানুসারে বোগার অভিকর্ষ বিচ্যুতি (Bouguer Gravity Anomaly) বলে।
(iii) C বিচ্যুতি : শিলাস্তরের ঘনত্বের পার্থক্যের ভিত্তিতে যখন অভিকর্ষ বিচ্যুতির সংশোধন করা হয়, তখন তাকে
‘C’ বিচ্যুতি বলে।
সিলেবাস-সমস্থিতির মতবাদ-(এইরি ও প্র্যাট)(Airy and Pratt Theory)
(১৫)সমস্থিতি সম্পর্কে এইরির মতবাদ আলোচনা কর। প্রশ্নের মান – 5
উত্তর-ব্রিটিশ জ্যোতির্বিজ্ঞানী জি বি এইরি 1855 খ্রিস্টাব্দে ব্যক্ত করেন যে, ভূপৃষ্ঠের পর্বত, মালভূমি, সমভূমি প্রভৃতি ভূখণ্ডগুলির উচ্চতা ও ঘনত্বের তারতম্যের সঙ্গে অ্যাসথেনোস্ফিয়ার বা নমনীয় মণ্ডলের এক গভীর সম্পর্ক আছে। অর্থাৎ পর্বত, পাহাড়, মালভূমি, সমভূমি প্রভৃতি ভূত্বকীয় অংশগুলি এক ভারসাম্যতার নীতি বজায় রেখে অবস্থান করে।জি বি এইরির তত্ত্ব ভূ-ত্বকের ভারসাম্য তত্ত্ব (Crustal Equilibrium)নামে পরিচিত। জি বি এইরি 1855 খ্রিস্টাব্দে তাঁর সমস্থিতি সম্পর্কিত একটি তত্ত্ব উপস্থাপন করেন।
তত্ত্বের মূলকথা :পৃথিবীর পর্বত, মালভূমি,সমভূমি ইত্যাদি ঘনত্ব ও উচ্চতার পার্থক্যে নীচের Asthenosphere এর ওপর ভারসাম্য অবস্থায় বিরাজ করে।
তত্ত্বের ধারণা (Main Concept): এইরির মতে, একই ধরনের ঘনত্বযুক্ত বিভিন্ন আয়তনের বস্তুকে জলে ভাসিয়ে দিলে সেগুলি বিভিন্ন উচ্চতায় জলের ওপর ভাসতে থাকে। ঠিক তেমনি পর্বত, মালভূমি, সমভূমিগুলিও Asthenosphereএর ওপর বিভিন্ন গভীরতায় অবস্থান করছে। এই নিমজ্জিত অংশকে বিজ্ঞানী এইরি Root বলেছেন। এই জন্য তাঁর তত্ত্বকে Root Hypothesis of Isostasy বলে।
🌴🌼 🌿 🌴🌼 🌿 🌴🌼 🌿 🌴🌼 🌴🌼 🌿 🌴🌼🌴🌼 🌿 🌴🌼 ……………………………………………………………………………………………………………………………………………
🌴🌼 🌿 🌴🌼 🌿 সমস্থিতি 🌴🌼 🌿 🌴🌼
……………………………………………………………………………………………………………………………………………
এইরির পরীক্ষা : এইরি সমস্থিতি মতবাদকে প্রমাণ করার জন্য একটি পরীক্ষা করেন। একটি জলের পাত্রে বিভিন্ন আয়তনের কাঠের টুকরো ভাসিয়ে দেন। তিনি লক্ষ করেন, যে কাঠের টুকরোটির আয়তন বেশি, সেই কাঠের টুকরোটি জলের মধ্যে বেশি গভীরতায় ভাসছে এবং অপেক্ষাকৃত কম আয়তনবিশিষ্ট কাঠের টুকরোটি কম গভীরতায় ভাসছে।এইভাবে তিনি বলেন যে, ভূত্বকের বিভিন্ন এককগুলি (পর্বত,মালভূমি) একই ঘনত্বের হলেও তাদের আয়তন বিভিন্ন হয়ে থাকে। ফলে ভূত্বকের এককগুলি নমনীয়মণ্ডলের (Asthenosphere) মধ্যে বিভিন্ন গভীরতায় অবস্থান করে । অর্থাৎ এই এককগুলির যতটা অংশ ভূপৃষ্ঠের ওপরে রয়েছে,তার চেয়ে বেশি অংশ ভূ-অভ্যন্তরে অবস্থান করছে।
এইরির পরীক্ষার সমালোচনা : এইরির তত্ত্বটি নানা দিক থেকে সমালোচিত হয়। যেমন-
(i) এইরি ভূত্বকের এককগুলির(পর্বত, মালভূমি, সমভূমি) ঘনত্বকে সমান ধরেন। কিন্তু ভূত্বকের সম এককগুলির ঘনত্ব একই প্রকার হয় না। খনিজের তারতম্যে ঘনত্বের তারতম্য হয়।
(ii) এইরি গভীরতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে ঘনত্ব বৃদ্ধির সাধারণ ধারণাটি মেনে নেননি। এটি এই তত্ত্বের একটি অন্যতম দুর্বল দিক।
(iii) এইরি বলেন, জলে ভাসমান হিমশৈলের মতো (হিমশৈলের 1/10 ভাগ জলের ওপরে ও 9/10 ভাগ জলের তলায়
থাকে) পৃথিবীর ভূত্বকের এককগুলি নমনীয় মণ্ডলে ভাসমান অবস্থায় আছে। সেই হিসাবে হিমালয়কে (8,848 x 9 = 79632 মিটার) 79632 মিটার গভীরতা পর্যন্ত প্রোথিত থাকতে হবে। কিন্তু ভূত্বকের গভীরে 30-32 মিটারে 1°C তাপমাত্রা বাড়তে থাকলে 79632 মিটার গভীরতার অনেক আগেই উষ্ণতা ও চাপজনিত কারণে পদার্থটি গলে যাবে।
(iv) ভূ-অভ্যন্তরে অতিরিক্ত চাপ ও তাপের প্রভাব এইরির তত্ত্বে অনুপস্থিত।
(১৬)সমস্থিতি সম্পর্কে প্র্যাটের মতবাদ আলোচনা কর। প্রশ্নের মান -5
উত্তর- 1859 খ্রিস্টাব্দে গণিতবিদ ও ধর্মযাজক জে এইচ প্র্যাট পর্বত, পাহাড়, মালভূমি, সমভূমি প্রভৃতি ভূত্বকীয়অংশগুলির ভারসাম্যের বিষয়ে এক মতবাদ ব্যক্ত করেন। তাঁর মতবাদের মূল ভিত্তি হল- জর্জ এভারেস্টের নেতৃত্বে উত্তর-মধ্য ভারতের কালিয়ানা ও কালিয়ানপুরে যখন নক্ষত্রের উন্নতি কোণ পরিমাপ করা হয় তখন বেশ কিছু অভিকর্ষজ অসংগতি লক্ষ করা যায়। এই অসংগতির পরিপ্রেক্ষিতে প্র্যাট তাঁর প্রতিবিধানের নিয়ম ( Laws of compensation) তত্ত্বটি প্রকাশ করেন।
প্রাথমিক অনুমানসমূহ (Basic Assumptions) : বিজ্ঞানী প্র্যাট তাঁর ধারণার সম্পর্কে কিছু অনুমানের সাহায্য নেন। এই অনুমানগুলি হল—(1) বিজ্ঞানী প্র্যাট-এর মতে, ভূত্বকের পর্বত, মালভূমি ও সমভূমি ইত্যাদি বিভিন্ন এককগুলি বিভিন্ন ঘনত্বের হয়।
(ii) যে সমস্ত এককগুলির ঘনত্ব কম, তার উচ্চতা বেশি হবে। (iii) যে সমস্ত এককগুলির ঘনত্ব বেশি, তার উচ্চতা কম হবে।
(iv) ভূত্বকের এককগুলি ভূ-গভীরে নমনীয় মণ্ডলের (অ্যাসথেনোস্ফিয়ার) মধ্যে একই গভীরতা পর্যন্ত বিস্তৃত থাকে।
তত্ত্বের ধারণা (Main Concept): প্র্যাট উপরোক্ত অনুমানের ওপর ভিত্তি করে বলেন, ভূত্বকের বিভিন্ন এককগুলি বিভিন্ন পদার্থ দ্বারা তৈরি, তাই তাদের ঘনত্ব বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে। এই বিভিন্ন ঘনত্বের এককগুলির ওজন প্রায় একই হয়। ফলে এই এককগুলি একই ধরনের চাপ প্রয়োগ করে। একই চাপের ফলে ভূত্বকের
🌴🌼 🌿 🌴🌼 🌿 🌴🌼 🌿 🌴🌼 🌴🌼 🌿 🌴🌼🌴🌼 🌿 🌴🌼 ……………………………………………………………………………………………………………………………………………
এককগুলি নমনীয় মণ্ডলের (Asthenosphere) একটি নির্দিষ্ট গভীরতাযুক্ত তল পর্যন্ত বিস্তৃত থাকে। একে তিনি প্রতিবিধানতল বা Level of Compensation বলে উল্লেখ করেন।
তত্ত্বের সমর্থনে পরীক্ষা : প্র্যাট তাঁর এই তত্ত্বের সমর্থনে একটি পরীক্ষা করেন। একটি পাত্রের মধ্যে পারদ নিয়ে তিনি একই ওজনের কিছু বিভিন্ন ঘনত্বের ধাতব ব্লক ভাসিয়ে দেন। দেখা যায়, লোহা, সীসা, দস্তা, টিন প্রভৃতি ধাতব টুকরোগুলির ঘনত্ব
আলাদা হলেও তাদের ওজন এক হওয়ার কারণে তারা পারদের মধ্যে একটি নির্দিষ্ট গভীরতা পর্যন্ত ভেসে রয়েছে।
এইপরীক্ষা দ্বারা তিনি এই সিদ্ধান্তে উপনীত হন যে, ভূত্বকের এককগুলিও একই ওজনের হওয়ার কারণে ভূ-অভ্যন্তরে
সমগভীরতা পর্যন্ত বিস্তৃত।
প্র্যাটের সমস্থিতি তত্ত্বের সমালোচনা : বিজ্ঞানী প্র্যাটের ধারণা বিভিন্নভাবে সমালোচিত হয়েছে। যেমন-
(i) প্রতিবিধান তল সম্পর্কিত • প্ল্যাট যে Level of Compensation বা প্রতিবিধানতলের কথা বলেছেন, তা সঠিক নয়। কারণ পরবর্তীকালে ভূকম্পীয় তরঙ্গ বিশ্লেষণ করে জানা গেছে, নবীন ভঙ্গিল পর্বতগুলির নীচে ভূত্বক প্রায় 70 কিমি পর্যন্ত বিস্তৃত। অপরদিকে মহাসাগরীয় অংশ 10-110 কিমি পর্যন্ত বিস্তৃত।
(ii) ঘনত্ব সম্পর্কিত : ভূত্বকের এককগুলি সম্বন্ধে বিভিন্ন ঘনত্বের যে ধারণা তিনি নিয়েছেন, তা সবসময় সঠিক নয়।
সমস্থিতি তত্ত্বের মূল্যায়ন : সমস্থিতি ধারণার ক্ষেত্রে বিজ্ঞানী প্র্যাট একটি স্বতন্ত্র দিকনির্দেশ করেছেন। পরবর্তীকালে প্রচলিত ধারণার থেকে পৃথক বলে প্র্যাট-এর ধারণা সমস্থিতির ব্যাখ্যায় একটি গুরুত্বপূর্ণ ধারণারূপে বিবেচিত হয়।
প্রতিবিধানতল : গণিতবিদ জে এইচ প্র্যাট তাঁর ভূত্বকীয় অংশগুলির ভারসাম্য অবস্থান ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেছেন যে,ভূত্বকে এমন এক তল রয়েছে যার নীচে অনুভূমিক দিকে পদার্থ সমপ্রকৃতির হয়। এই তলকে প্র্যাট প্রতিবিধানতল (Level of compensation) বলেছেন।
বৈশিষ্ট্য
(i) ভূত্বকীয় খণ্ডগুলি স্তস্তরূপে প্রতিবিধানতলে সমান চাপ প্রয়োগ করবে বলে ধারণা।
(ii) প্রতিবিধানতলে শিলার ঘনাঙ্ক অনুসারে ভূত্বকীয় অংশগুলির (পর্বত, মালভূমি, সমভূমি প্রভৃতি) উচ্চতা নির্ভর করে। যেমন—হালকা পাললিক শিলার ভঙ্গিল পর্বতগুলির ভূপৃষ্ঠের দিকে উচ্চতা বেশি হয় ও ভারী লাভাগঠিত সমভূমির উচ্চতা কম হয়
(১৩)এইরি ও প্র্যাটের সমস্থিতি মতবাদের পার্থক্য লেখ। প্রশ্নের মান – 3
এইরির তত্ত্ব | প্র্যাটের তত্ত্ব | |
উপস্থাপন কাল | এইরি 1855 সালে তাঁর তত্ত্বটি উপস্থাপন করেন। | প্র্যাট 1859 সালে তাঁর তত্ত্বটি উপস্থাপন করেন। |
ভিত্তি | এইরি-র তত্ত্বটি ‘ভাসমানতার নীতির’ ওপর প্রতিষ্ঠিত। | প্র্যাট-এর তত্ত্বটি ‘প্রতিবিধান তলের সূত্রের ওপর প্রতিষ্ঠিত। |
সম্পর্ক | এই তত্ত্বে ভূত্বকীয় খণ্ডগুলির গভীরতা ও উচ্চতা সমানুপাতিক সম্পর্ক নির্দেশ করে। | এই তত্ত্বে ভূমিরূপগুলির ঘনত্ব ও উচ্চতাব্যস্তানুপাতিক সম্পর্ক নির্দেশ করে। |
ভারসাম্য | এই তত্ত্বে জলগত হাইড্রোস্ট্যাটিক ভারসাম্যের ধারণা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে । | এই তত্ত্বে জলগত বা উদস্থৈতিক বা হাইড্রোস্ট্যাটিক ভারসাম্যের ধারণা প্রতিষ্ঠিত হয় নি । |
ঘনত্ব | ভূ-খণ্ডগুলোকে সম ঘনত্ব বলেছেন | ভূ-খণ্ডগুলিকে বিষম ঘনত্ববিশিষ্ট বলেছেন । |
চিত্র |
🌴🌼 🌿 🌴🌼 🌿 সমস্থিতি 🌴🌼 🌿 🌴🌼 ……………………………………………………………………………………………………………………………………………
(১৪) যে স্থান যত উঁচুতে তার শিকড় তত গভীরে “আলোচনা কর। অথবা পর্বতের শিকড় আছে Mountain have roots) – ব্যাখ্যা করো :
এইরির সমস্থৈতিক মতবাদ অনুসারে তরলের ওপর ভাসমান কোনো পদার্থের নিমজ্জিত অংশ একটি নির্দিষ্ট অনুপাতে নিমজ্জিত থাকে। সাধারণত ভাসমান অংশ যদি 1 একক হয় তবে নিমজ্জিত অংশ 9 একক হয়। এক্ষেত্রে পর্বত, পাহাড় ইত্যাদি ভূত্বকের ওপরে যতটুকু উচ্চতায় আছে নীচে তার নয় গুণ নিমজ্জিত আছে। তাই বলা হয় ওই নিমজ্জিত অংশই হল পাহাড় বা পর্বতের শিকড়। পর্বতের উচ্চতা সবচেয়ে বেশি,তাই পর্বত সবচেয়ে বেশি নিমজ্জিত আছে ।মালভূমি পর্বত অপেক্ষা কম উঁচু তাই মালভূমির পর্বতের চেয়ে কম নিমজ্জিত হয়ে আছে, সমভূমি আবার মালভূমি অপেক্ষা কম উঁচু ,তাই সমভূমি আরো কম নিমজ্জিত হয়ে আছে।একারণেই বলা হয় যে স্থান যত উঁচুতে তার শিকড় তত গভীরে।
সিলেবাস- সমস্থিতি সমন্বয়( Isostatic adjustment)
(১৭) সমস্থৈতিক সমন্বয় [Isostatic Adjustments- বলতে কি বুঝ
উত্তর-সমস্থৈতিক সমন্বয় [Isostatic Adjustments- অন্তর্জাত ও বহির্জাত প্রক্রিয়ার ক্রিয়াশীলতা সত্ত্বেও ভূমিরূপের উচ্চতাগত ভারসাম্য বজায় থাকলে তাকে সমস্থৈতিক সমন্বয় (Isostatic Adjustments)বলে। ইহা দুইপ্রকার। যথা—
1) স্থানীয় সমস্থৈতিক সমন্বয় (Local Isostatic Adjustment):(2) আঞ্চলিক সমস্থৈতিক সমন্বয় (Regional Isostatic Adjustment) :
1) স্থানীয় সমস্থৈতিক সমন্বয় (Local Isostatic Adjustment):( স্বল্পপরিসর স্থান জুড়ে অন্তর্জাত ও বহির্জাত প্রক্রিয়ার ক্রিয়াশীল থাকা সত্ত্বেও জদি ভূমিরূপের ভারসাম্য বজায় থাকে তবে তাকে স্থানীয় সমস্থৈতিক সমন্বয় বলে।
(2) আঞ্চলিক সমস্থৈতিক সমন্বয় (Regional Isostatic Adjustment) :আরোহণ প্রক্রিয়ায় সৃষ্ট কোনো ভূমিখণ্ডের উপরিভাগ বিভিন্ন প্রাকৃতিক শক্তি দ্বারা ক্ষয়প্রাপ্ত হলে তার উচ্চতা হ্রাস পায়।ক্ষয়জাত পদার্থ অন্যত্র পরিবাহিত হয়ে সেখানকার চাপ বৃদ্ধি করলে ভূ-অভ্যন্তরে চাপ বৃদ্ধিজনিত কারণে নতুনভাবে সমস্থৈতিক সমন্বয় সৃষ্টি হলে তাকে আঞ্চলিক সমস্থৈতিক সমন্বয় বলে। যেমন- পাত সঞ্চালনের ফলে সৃষ্ট একটি ভঙ্গিল পর্বত যখন ক্ষয়কারী শক্তির মুখোমুখি হয় তখন তা ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে উচ্চতা হ্রাস পায় ।
স্থির তরল বা গ্যাসীয় পদার্থের মধ্যে কোনো বস্তুকে নিমজ্জিত করলে ওই বস্তুটির ওপর উক্ত তরল বা গ্যাসীয় পদার্থ যেঊর্ধ্বমুখী উল্লম্ব চাপ প্রয়োগ করে, তাকে প্লবতা বল বলে।বস্তুর ওজন প্লবতার থেকে বেশি হলে বস্তুটি ডুবে যায়, বস্তুর ওজন প্লবতা থেকে কম হলে বস্তুটি ভাসতে থাকে, বস্তুর ওজন ও প্লবতা সমান হলে বস্তুটি ডুবে ভেসে থাকে।
(১৯) প্লাম্ব রেখা (Plumb line) কি?:
উত্তর- প্লাম্ব লাইন হল এক প্রান্তে ভার ঝুলানো দড়ির এমন একটি উলম্ব রেখা, যার সাহায্যে কোনো বস্তু তার উলম্ব অবস্থান থেকে কতখানি হেলে আছে তা নির্ণয় করা সম্ভব হয়।ডাম্পি লেভেল, থিওডোলাইট,প্লেন টেবিল প্রভৃতি যন্ত্রে প্লাম্ব ব্যবহার করা হয় ।
……………………………………………………………………………………………………………………………………………
(
সিলেবাস- সিমাটোজেনি(Cymatogany)
(২১) সিমাটোজেনি কাকে বলে? সিমাটোজেনি সম্পর্কে লিখ । 3
সিমাটোজেনি (Cymatogeny)-বহির্জাত প্রক্রিয়ার প্রভাবে পার্বত্য অংশের ক্ষয়প্রাপ্ত পদার্থ পরিবাহিত হয়ে সমুদ্রে জমা হতে থাকলে পদার্থের চাপে ভূ-অভ্যন্তরস্থ ম্যাগমা পার্বত্য অংশে ঊর্ধ্বমুখী চাপ সৃষ্টি করে পর্বতের উত্থান ঘটায় ।একে সিমাটোজেনি (Cymatogeny) বলে।লেস্টার চার্লস কিং (Lester Charles King) [1907–1989] হলেন সিমাটোজেনি ধারণার প্রবক্তা।
প্রথমে বিভিন্ন প্রাকৃতিক শক্তি (আবহবিকার, নদী, বায়ু,হিমবাহ প্রভৃতি) দ্বারা পার্বত্যাঞ্চল ক্ষয়প্রাপ্ত হতে থাকে।এরপরে-পুঞ্জিত ক্ষয়, বৃষ্টির জল,নদনদী বায়ুপ্রবাহ ইত্যাদি দ্বারা ক্ষয়িত পদার্থ অন্যত্র অপসারিত হয়।
অপসারিত পদার্থ সমুদ্রগর্ভে সঞ্চিত হলে চাপের তারতম্য দেখা জায় । ক্ষয়প্রাপ্ত পার্বত্য অঞ্চলের চাপ কমে, কিন্তু সমুদ্রগর্ভে ক্ষয়িত পদার্থ জমা হওয়ায় ভূগর্ভে চাপ বৃদ্ধি পেতে থাকে । ফলে চাপের ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য সমুদ্রের তলদেশের ম্যাগমা স্তর অপেক্ষাকৃত কম চাপযুক্ত পার্বত্য অংশের নীচের ম্যাগমা স্তরের দিকে সঞ্চালিত হতে থাকে । এভাবে পর্বতের নিমজ্জিত অংশে ম্যাগমার অধিক সমাবেশ ঘটায় ঊর্ধ্বমুখী চাপ সৃষ্টি হতে থাকে এবং পর্বতটির উত্থান ঘটে । পর্বতের অবনমন ও উত্থানের প্রক্রিয়াকে কিং সিমাটোজেনি নাম দিয়েছেন ।